বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গত এক সপ্তাহ ধরে অবিরাম ভারি বর্ষনে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকার বোর ধান ক্ষেত ডুবে গেছে। কৃষকের স্বপ্ন ডুবে যাওয়ায় দিনমজুর সংকটে দিশেহারা হয়ে পরেছে অনেকে। ঠিক সেই মুর্হুতে গত রোববার হতে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামের বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পানির মধ্যে ডুবে যাওয়া ধান কেটে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক অজিত কুমার রায় জানান, যদিও কৃষক তাদেরকে পারিশ্রমিক দিয়েছে, তারপরও এটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ। তাদের এই উদ্যোগে উৎসাহি হয়ে যদি শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে পানির নিচে ডুবে যাওয়া ধান কেটে দেয় তাহলে কৃষকরা অনেকটা উপকৃত হবে। আগামী এক সপ্তাহ যদি জোট বেঁধে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা বোরধান কেটে দেয় তাহলে কৃষকদের সমস্যা যেমন সমাধান হবে, তেমনি অল্প আয়ের মধ্যবিত্ত শ্রেণির অভিভাবকের মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপকরণ ক্রয় করার মত অর্থ রোজগার হবে।
কৃষক বাবু মিয়া জানান, তার ২বিঘা জমির পাঁকা ধান পানির নিচে ডুবে গেছে। দিনমজুর সংকটে ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসতে পারছিল না। কৃষকের কষ্ট সহতে না পেয়ে স্কুল শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান তার কয়েকজন বন্ধু মিলে ধান কেটে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ওই কৃষকের ধান কেটে দিলে কৃষক তাদেরকে পারিশ্রমিক দেয়।
স্কুল শিক্ষার্থী আলমিন মিয়া জানান, তিনি নিজের থেকে এই উদ্যোগ নিয়ে তার বন্ধুদের আগ্রহী করে তোলে। এরপর ধান কেটে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি বলেন, এতে তাদের লেখাপড়ার তেমন ক্ষতি হবে না। পাশাপাশি এক সপ্তাহ কাজ করলে শিক্ষা উপকরণসহ পোশাক কেনার টাকা রোজগার হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেন মন্ডল জানান, এটি একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ । প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় এক সপ্তাহ নিজের পাশাপাশি অন্যের ক্ষেতের ধান কেটে দিলে লেখাপড়ার তেমন ক্ষতি হবে না। বরং শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মমানবতা বোধ সৃষ্টি হবে ।
উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির জানান, আসলে দিনমজুর সংকটে অনেক কৃষক পাঁকা ধান ঘরে তুলতে পারছে না। সে কারণে অনেক কৃষক দুশ্চিতায় পড়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময়ে সকলের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, করোনাকালিন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা মোতাবেক, শিক্ষক, দলীয় নেতাকর্মী, পুলিশ সদস্যরা অনেক কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা ধান কাটছে। এটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ। সামাজিক কাজে শিক্ষার্থীদের উৎসাহি করে তোলা সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য।